পায়ের কোন অংশে ব্যথা কিসের লক্ষণ/What are the symptoms of pain in any part of the foot?
হঠাৎ করে একটু বেশি হাঁটলে পায়ের গোড়ালিতে চিনচিনে ব্যথা, সিঁড়ি ভাঙতে গেলেই হাঁটুতে অস্বস্তি, গভীর রাতে ঘুমের মধ্যেই পায়ের পেশিতে টানের মতো ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। দৈনন্দিন জীবনের এমন ছোটখাটো পায়ের সমস্যাকে আমরা অনেকেই পাত্তা দিই না।
আমরা মনে করি, এসব ব্যথা সামান্য বিশ্রাম নিলেই বা একটু তেল মালিশ করলেই সেরে যাবে। কিন্তু চিকিৎসকদের মত, পায়ের বিভিন্ন অংশের এই ব্যথা মোটেই অবহেলার বিষয় নয়।
আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মনে হলেও এর আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস থেকে শুরু করে রক্তনালীর গুরুতর সমস্যা বা এমনকি স্নায়ুরোগের মতো জটিল অসুখও।
গোড়ালি ও পায়ের পাতা
অনেকের সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেলতেই গোড়ালিতে ব্যথা হয়। এই লক্ষণের নাম ‘প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস’। পায়ের পাতার তলায় থাকা ‘প্ল্যান্টার ফাসিয়া’ নামক লিগামেন্টে প্রদাহের কারণে এই সমস্যা হয়।
তবে শুধু তাই নয়, রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে ‘গাউট’ বা গেঁটে বাতের কারণেও গোড়ালি বা পায়ের বুড়ো আঙুল ফুলে লাল হয়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে।
কাফ মাসলের ব্যথা
গভীর রাতে বা ভোরের দিকে পায়ের কাফ মাসলে তীব্র খিঁচুনি বা টান (ক্র্যাম্প) ধরার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। মূলত শরীরে পানি কমে গেলে (ডিহাইড্রেশন) ও পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজের ঘাটতি হলে এই সমস্যা দেখা দেয়।
পায়ের অসাড়তা
ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে পায়ে কড়া বা কর্ন দেখা যায়।
এই ধরনের ক্ষততে ব্যথা বা অনুভূতিহীনতা অত্যন্ত ঝুঁকির সংকেত। একে ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’ বলা হয়। স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক সময়ে ডায়াবেটিক রোগী আঘাত পেলেও টের পান না, যা থেকে পায়ে মারাত্মক ঘা বা ‘গ্যাংগ্রিন’ পর্যন্ত হতে পারে।
হাঁটু ও অন্যান্য গাঁট
অস্টিওআর্থ্রাইটিস : মূলত বয়সজনিত কারণে বা গাঁটের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কার্টিলেজ ক্ষয়ে গিয়ে এই সমস্যা হয়। এতে হাঁটাচলা, সিঁড়ি ভাঙা বা বসার সময় হাঁটুতে ব্যথা ও শক্তভাব অনুভূত হয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস : এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেই অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে। এর ফলে শুধু হাঁটু নয়, শরীরের একাধিক গাঁটে একসঙ্গে যন্ত্রণা হতে পারে, সঙ্গে থাকে ফোলা ভাব।
পায়ে ঝিঁ ঝিঁ বা অবশ ভাব
অনেকক্ষণ একভাবে বসে থাকলে বা শুয়ে থাকলে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরাটা স্বাভাবিক। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হলেই তা সেরে যায়। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই যদি বারবার পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে, সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি হয় বা একাংশ অবশ হয়ে যায়, তবে তা স্নায়ুরোগের লক্ষণ হতে পারে। ভিটামিন বি১২-এর অভাব, থাইরয়েডের সমস্যা বা ‘সায়াটিকা’ (কোমরের স্নায়ুতে চাপ পড়ার কারণে) থেকে এই ধরনের অনুভূতি হতে পারে।সূত্র : আজকাল
Post a Comment