Header Ads

এ মাসের মধ্যেই বাতিল হচ্ছে ১০ ধরনের নামজারি!10 types of name-calling are being canceled this month!

 

এ মাসের মধ্যেই বাতিল হচ্ছে ১০ ধরনের নামজারি!10 types of name-calling are being canceled this month!



জমি ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। দেশের সব জেলায় আগামী বছর থেকে ডিজিটাল নামজারি ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। তাই এ বছরকে ভূমি প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের বছর হিসেবে ধরা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নতুন নীতিমালায় এমন ১০ ধরনের জমির নামজারি (মিউটেশন) আর কার্যকর থাকবে না; অনেক ক্ষেত্রেই নামজারি সম্পূর্ণ বাতিল হয়ে যাবে। এতে দেশজুড়ে জমির মালিকানা যাচাই, রেকর্ড সংশোধন এবং খতিয়ান আপডেটে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে পারে।

যে কারণে এ সিদ্ধান্ত

দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জেলায় অভিযোগ উঠছিল—জাল দলিল, ভুল দাগ নম্বর, ঘুষ দিয়ে নামজারি, দখলে না থাকা ভূমি নিজের নামে তোলা এবং সরকারি ও সংস্থার জমি ব্যক্তির নামে নামজারি—এ ধরনের অনিয়ম ব্যাপকভাবে বাড়ছে। এসব বন্ধ করতেই ভূমি প্রশাসন কাঠোর এসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

নতুন নীতির ফলে অস্বচ্ছ, জালিয়াতি বা আইনি জটিলতায় থাকা জমির নামজারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে। ফলে জমির মালিকরা আগেই সতর্ক না হলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন।

নামজারি বাতিল হতে যাওয়া ১০ ধরনের জমি:

👉১. চলমান দেওয়ানি মামলার জমি

জমি নিয়ে মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কেউ যদি ঘুষ বা প্রভাব খাটিয়ে নিজের নামে নামজারি করে নেন, সেটি বাতিল হবে। মামলার অপর পক্ষ এসিল্যান্ড অফিসে “মিস কেস” করলেই নামজারি শূন্য ঘোষণা হয়ে যাবে।

👉২. দখলে না থাকলেও নামজারি করা জমি

যে জমির প্রকৃত দখল অন্য কারও কাছে, কিন্তু নামজারি করেছেন আপনি—এ ধরনের নামজারিও টিকে থাকবে না। দখলে থাকা ব্যক্তি আপত্তি দিলে নামজারি বাতিল হবে।

👉৩. অংশের চেয়ে বেশি জমি নামজারি

যদি কারও মালিকানায় ৩ শতাংশ জমি থাকে, কিন্তু তিনি প্রতারণা করে ৫ শতাংশ নামজারি নেন—এই অতিরিক্ত অংশের নামজারি বাতিল হবে।

👉৪. ভুল দাগ নম্বর দিয়ে নামজারি

দলিলে ভুল দাগ নম্বর থাকা সত্ত্বেও ঘুষ দিয়ে নামজারি করালে তা আর বহাল থাকবে না। দলিলের ভুল সংশোধন না করলে নামজারি ২০২৫ সালে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যেতে পারে।

👉৫. অর্পিত সম্পত্তি (Khas/Enemy Property)

অর্পিত সম্পত্তির মধ্যে

ক-তফসিল: সরকারি সম্পত্তি

খ-তফসিল: মালিকানা সম্পত্তি

ক-তফসিলের জমি কোনোভাবেই নামজারি করা যাবে না। ভুলভাবে নামজারি হয়ে থাকলেও তা বাতিল করা হবে।

👉৬. খাস জমি

খাস জমি (১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত) কোনো নাগরিকের নামে নামজারি করা যাবে না। ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের ৮৬–৯২ ধারায় এসব জমি সরকারের মালিকানাধীন। ভুলবশত নামজারি থাকলে সেটিও বাতিল হবে।

👉৭. সরকারি সংস্থার জমি

রেলওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগের জমি বা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি—সবই নামজারি নিষিদ্ধ। ভুলভাবে নামজারি হয়ে থাকলেও তা বাতিল হয়ে যাবে।

👉৮. রেকর্ডবিহীন জমি

সর্বশেষ রেকর্ড (RS/BS/CS/DCR) না থাকা জমি কোনোভাবেই নামজারি করা যাবে না। রেকর্ডবিহীন জমির পূর্বে করা নামজারিও বাতিল হবে।

👉৯. অনলাইন তালিকাভুক্ত নিষিদ্ধ সম্পত্তি

অনলাইনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিষিদ্ধ সম্পত্তির তালিকায় (সংস্থা/খাস/অর্পিত) তালিকাভুক্ত জমি নামজারি করলে তা তৎক্ষণাৎ বাতিল হবে।

👉১০. প্রতারণা, জালিয়াতি বা ঘুষে করা যেকোনো নামজারি

ঘুষ দিয়ে তহসিল অফিসার বা এসিল্যান্ডকে প্রভাবিত করে করা সব নামজারি একে একে বাতিল করা হবে।

নামজারি বাতিল হলে কী হবে?

নামজারি বাতিল হলে—জমির মালিকানা নিয়ে পুনরায় বিরোধ তৈরি হবে, খাজনা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে, জমি বিক্রি বা হস্তান্তর আটকে যাবে, ভবিষ্যৎ রেকর্ড সংশোধনে বড় ঝামেলা হবে।

কিভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন?

  • দলিলের দাগ নম্বর, পরিমাণ ও মৌজা যাচাই করুন।
  • দখল নিশ্চিত করে তবেই নামজারি করুন।
  • খাস বা সংস্থার জমি কিনবেন না।
  • অনলাইন ভূমি তথ্য সিস্টেমে দাগ নম্বর দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করুন।
  • দলিলের ভুল থাকলে অবিলম্বে সংশোধন করুন।
  • প্রয়োজনে এসিল্যান্ড অফিসে আপত্তি/মিস কেস করুন।
  • তাই জমি কেনার আগে বা নামজারি করার আগে এসব বিষয় মেনে চলার পরমর্শ দেন সংশ্লিষ্টরা।

 news24bd

No comments